সবজি চাষে উদ্বুদ্ধকরণ ও পুষ্টিগুণ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে রাজধানীর ফার্মগেটস্থ আ.কা.মু গিয়াস উদ্দীন মিল্কী অডিটরিয়াম চত্বরে ০৫ জানুয়ারি ২০১৭ থেকে শুরু হয়েছে ‘জাতীয় সবজি মেলা ২০১৭’। মেলা চলবে ০৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে এ মেলার উদ্বোধন করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান, এমপি। মন্ত্রী বলেন, সবজি উৎপাদনে দেশে বিল্পব ঘটেছে। সবজি উৎপাদনের এ অর্জন ও সফলতা আমাদের ধরে রাখতে হবে। সবজি উৎপাদনে কৃষি বিভাগ অনবদ্য ভূমিকা পালন করছে। ফসলের ন্যায্যমূল্য ফেলে কৃষক মাটি ফাটিয়ে উৎপাদন করবে। তিনি আরও বলেন, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু আমাদের সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিয়েছেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাননীয় কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, আমাদের দেশ বারোমাস সবজি উৎপাদনের অনুকূলে রয়েছে। কারণ আমার দিনের সূর্যালোক ঠিকমতো পাচ্ছি, যা সবজি উৎপাদনে অত্যন্ত সহায়ক। এছাড়াও রয়েছে বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কার। মন্ত্রী বলেন, আমরা ’৯৬তে হাইব্রিডের প্রচলন করে বিভিন্ন সমালোচনার সম্মুখীন হই। কিন্তু সেই সময়ে হাইব্রিড ফসল প্রচলনের জন্যই আজ আমরা সারা বছর সবজিসহ বিভিন্ন ফসল পাচ্ছি। এর সুফল পাচ্ছে এদেশের কৃষক ও মানুষ। সমালোচনা শুনলে আজ আমরা সবজিতে এগুতে পারতাম না। তিনি আরও বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়নের ফলে এখন বিভিন্ন জায়গার সবজি একস্থান থেকে অন্য স্থানে বহনে সুবিধা হচ্ছে। জিএমও ফসলের উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে আমরা জিএমও ফসলের বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করি। জিএমওর বিষয়ে আমরা স্বচ্ছ মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে যাবো। জিএমওর আবিষ্কার ও সুফল আস্তে আস্তে জনগণ পাবে। আমরা কীটনাশক খাবো, না জিএমও খাবো এটা আমাদের ভাবতে হবে। সবজিতে লাভ বেশি হওয়ার কারণে কৃষকরা এখন অন্য ফসলের চেয়ে সবজিচাষে বেশি ঝুঁকছেন। মন্ত্রী বলেন, আসুন আমরা সবুজ মাঠ নিয়ে লড়াই করি, শিক্ষা নিয়ে লড়াই করি, জঙ্গীবাদ নিয়ে নয়। বাংলার মানুষ সামনের দিকে যাবে, পশ্চাতে নয়।
কৃষি সচিব জনাব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. হামিদুর রহমান। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান জনাব আবুল কালাম আযাদ। ‘পুষ্টি নিরাপত্তা ও দারিদ্র বিমোচনে বছরব্যাপী বৈচিত্র্যময় নিরাপদ সবজি চাষ’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর উদ্যানতত্ব গবেষণা কেন্দ্রের প্রাক্তন পরিচালক ড. শাহাবুদ্দিন আহমদ। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য এ্যাভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি, এমপি ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো. মোশারফ হোসেন। অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রণালয়াধীন বিভিন্ন অধিদপ্তর/সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, বরেণ্য কৃষিবিদ, কৃষি বিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানী, গবেষক, কৃষকগণ অংশগ্রহণ করেন।
জাতীয় সবজি মেলা ২০১৭-এর প্রতিপাদ্য-‘সুস্থ্ সবল স্বাস্থ্য চান, বেশি করে সবজি খান’ । দেশে দ্বিতীয়বারের মতো বড় আকারে সবজি মেলার আয়োজন করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চাষ করা হরেক রকমের সবজি দেখার পাশাপাশি এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন মেলায় আসা দর্শনার্থীরা। নতুন নতুন সবজির সঙ্গে শহরবাসীর পরিচয় ঘটবে প্রথমবারের মতো বৃহৎ পরিসরের এ মেলার মাধ্যমে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনের মধ্যে ছিলো র্যালি, সেমিনার, জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্র ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান । এতে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রায় ৪৮ টি স্টল অংশগ্রহন করছে। সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে।